ঘরের মাঠে বাজলো সিলেটের ‘বিদায় ঘণ্টা’

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৯:৩৯ পিএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ঘরের মাঠে বাজলো সিলেটের ‘বিদায় ঘণ্টা’

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের প্রথম দল হিসেবে সিলেট সানরাইজার্সের কার্যত বিদায় ঘণ্টা বাজলো। নিজের মাঠে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে রানের ব্যবধানে হেরে গেছে সিলেট। এ হারে পয়েন্ট টেবিলের তলানীতে থাকা দলটির প্লে-অফে খেলার আশা ক্ষীণ হয়ে গেল। বাকি তিন ম্যাচে জয় পেলেও প্লে-অফে নিয়ে শঙ্কা রয়েছে দলটির।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক সিলেট। ফলে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮২ রানের সংগ্রহ গড়ে খুলনা টাইগার্স। ১৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৬৭ রান তুলে সিলেট। ফলে ১৫ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিক সিলেন সানরাইজার্স।

দল ১৫ রানে হারলেও শেষ ওভারে খেলা জমিয়ে দিয়েছিল সিলেট। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ৩৬ রানের প্রয়োজন হলে প্রথম তিন বলে তিন ছক্কায় উত্তেজনা ছড়ান আলাউদ্দিন বাবু। তবে কামরুল ইসলামের বাকি ৩ বলে ২ নিতে পারে সিলেট। শেষ ওভারে ২০ রান তুলতে পারে টেবিলের তলানীতে থাকা দলটি।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই রান আউট হন খুলনার হয়ে খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে ফ্লেচার। আর পরের বলেই পিঞ্চ হিটার হিসেবে নামা মাহেদি হাসানকে বিদায় দেন সিলেটের স্পিনার সোহাগ গাজী। প্রথম স্লিপে মাহেদির ক্যাচ নেন অলক কাপালি।

দুই বলে দুই উইকেট পতনের পর উইকেট গিয়ে দু’টি চার আদায় করে নেন ইয়াসির আলি। ফলে প্রথম ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৯ রান পায় খুলনা। পাওয়ার প্লের সুবিধা ভালোভাবে কাজে লাগান আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার ও ইয়াসির। ৪৬ রান তুলে তারা। তবে ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে ইয়াসিরকে বোল্ড করেন একেএস স্বাধীন।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর, পরের তিন ওভারে কোন বাউন্ডারি বা ওভার বাউন্ডারি আদায় করতে পারেননি সৌম্য ও অধিনায়ক মুশফিক। দশম ওভারে দু’টি বাউন্ডারিতে খড়া কাটে। রানের চাকা ঘুড়িয়ে ১৩তম ওভারে দলের স্কোর ১শতে নেন সৌম্য ও মুশফিক। ১৫তম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৬তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য। ৪৩ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি।

বোপারার করা ১৬তম ওভারে ১টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি মারেন মুশফিক। ১৮তম ওভারে ৩২ বল খেলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৯তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক। চতুর্থ উইকেটে সৌম্য-মুশফিকের ৮৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৩১ রানের জুটিতে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮২ রানের সংগ্রহ পায় খুলনা।

সিলেটের অধিনায়ক বোপারা ইনিংসের নবম ওভারে বল বিকৃতি করলে তাৎক্ষনিক জরিমানা হিসেবে ৫ রান পেনাল্টি করা হয়। এতে ৫ রান খুলনার স্কোরবোর্ডে যোগ হয়। ৬২ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত ৮২ রান করেন সৌম্য। ৩৮ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৬২ রান করেন মুশফিক।

১৮৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগান সিলেটের দুই ওপেনার লেন্ডন সিমন্স ও এনামুল হক। ৬ ওভারে ৪১ রান তোলেন তারা। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে সিমন্সকে শিকার করেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদ। টেস্ট মেজাজে খেলা সিমন্স ১৭ বলে ১০ রান করেন।

তিন নম্বরে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার কলিন ইনগ্রামকে নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন এনামুল। সপ্তম ওভারে মাহেদিকে পরপর দু’টি ছক্কা মারেন এনামুল। এরপর ৩৯ বলে সিলেট কোন বাউন্ডারি আদায় করতে পারেনি। ১১তম ওভারে সেট ব্যাটসম্যান এনামুলকে বিদায় করেন শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা। ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৪৭ রান করেন এনামুল।

এনামুলের বিদায়ে উইকেটে এসে টেস্ট মেজাজে খেলতে শুরু করেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৮ বল খেলে ২ রান নিয়ে সৌম্যর প্রথম শিকার হন মিঠুন। পরের ওভারে বোপারকে খালি হাতে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান পেরেরা। এতে ৭৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সিলেট। এ অবস্থায় আস্কিং রেট ১৪ ছুঁই-ছুঁই। তখনই খুলনার বোলারদের উপর চড়াও হন ইনগ্রাম ও মোসাদ্দেক।

কামরুল ইসলামের করা ইনিংসের ১৬তম ওভারে ১৭ রান নেন তারা। পেরেরার পরের ওভারে উঠে ১১ রান। তবে খালেদের করা ১৮তম ওভারের প্রথম বলে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া ইনগ্রাম পরের বলে মিড উইকেটে জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজার তালুবন্দি হন। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৮ বলে ৩৭ রান করেন ইনগ্রাম। মোসাদ্দেকের সাথে ৩০ বলে ৫৮ রানের জুটি ছিলো ইনগ্রামের।

ইনগ্রাম যখন ফিরেন তখন ১৬ বলে ৫২ রানের প্রয়োজন ছিল সিলেটের। শেষ ওভারে ৩৬ রানের দরকারে প্রথম তিন বলেই ছক্কা মারেন আলাউদ্দিন বাবু। তবে পরের তিন বলে ২ রান দিয়ে খুলনার জয় নিশ্চিত করেন কামরুল। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৭ রান করে ম্যাচ হারে সিলেট।

২২ বলে ৭টি চারে অপরাজিত ৩৯ রান করেন মোসাদ্দেক। আর শেষ দিকে ঝড় তুলে ৭ বলে অপরাজিত ২৫ রান করেন আলাউদ্দিন। তার ইনিংসে ১টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিল। খুলনার পেরেরা-সৌম্য ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন সৌম্য সরকার।

আসরে নিজেদের ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়স্থানে উঠলো খুলনা। ৭ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ছয় দলের মধ্যে টেবিলের তলানিতেই থাকলো সিলেট। আর ৮ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে বরিশাল।

স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস

[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]



শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

‘বল টেম্পারিং’ চেষ্টায় পেনাল্টি খেল সিলেট সানরাইজার্স

‘বল টেম্পারিং’ চেষ্টায় পেনাল্টি খেল সিলেট সানরাইজার্স

দলের বাজে অবস্থায় নেতৃত্ব হারালেন মোসাদ্দেক

দলের বাজে অবস্থায় নেতৃত্ব হারালেন মোসাদ্দেক

বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশি, ব্যাটারদের বার্তা দিলেন সাকিব

বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশি, ব্যাটারদের বার্তা দিলেন সাকিব

কুমিল্লাকে হারিয়ে প্লে-অফে বরিশালের ‘এক পা’

কুমিল্লাকে হারিয়ে প্লে-অফে বরিশালের ‘এক পা’