বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সবার আগে প্লে-অফে এক পা দিয়ে রাখলো সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন ফরচুন বরিশাল। সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে বরিশাল। অন্যদিকে, হারের স্বাদ পেলেও প্লে-অফের দৌড়ে বেশ ভালোভাবেই ঠিকে রয়েছে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা-বরিশালের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় চলমান বিপিএলের সিলেট পর্ব। ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় কুমিল্লা। ফলে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৫ রানের সংগ্রহ গড়ে বরিশাল।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে বরিশালের বোলারদের তোপে ৯ উইকেটে ১২৩ রান করতে পারে কুমিল্লার ব্যাটাররা। ফলে ৩২ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়।
এ জয়ে ৮ খেলায় ৫ জয়, ২ হার ও ১টি পরিত্যক্ত ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠেছে ফরচুন বরিশাল। এর ফলে নক-আউট পর্বের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে বরিশাল। অপরদিকে, ৭ ম্যাচে ৪ জয়, ২ হার ও ১টি পরিত্যক্ত ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিযান্স।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন বরিশালের দুই ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল। ১৯ বলে ৩২ রান তোলার পরই ছন্দপতন। চতুর্থ ওভারে কুমিল্লার স্পিনার তানভীর ইসলামের বলে কাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সুমন খানকে ক্যাচ দিয়ে ৮ বলে ১০ রান করা গেইল আউট হলে প্রথম উইকেট হারায় বরিশাল।
ব্যাট হাতে তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। তানভীরের দ্বিতীয় শিকার হবার আগে ১ রানে থামেন তিনি। এরপর শাহরিয়ারের সাথে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। পঞ্চম ওভারে সুমন খানের বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কা আদায় করে নেন শাহরিয়ার।
অষ্টম ওভারের শেষ বলে ইংল্যান্ড স্পিনার মঈন আলির শিকার হয়ে বিদায় নেওয়া আগে ২৫ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৫ রান করেন শাহরিয়ার। সাকিবের সাথে ২১ রানের জুটি গড়েন তিনি। তবে দলকে লড়াই করার মতো স্কোরের ভিত গড়ে দেন সাকিব ও তৌহিদ হৃদয়। চতুর্থ উইকেটে ৫৫ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন তারা। শুরুতে সাবধান থাকলেও সাকিব-হৃদয় বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন।
মোস্তাফিজুর রহমানের করা ১৭তম ওভারে জীবন পান হৃদয়। ওই ওভারে পরপর দুটি চার মেরে ১ রান নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২১তম হাফ-সেঞ্চুরিতে পা রাখেন সাকিব। ৩৬ বলে হাফ-সেঞ্চুরির করার পরের ডেলিভারিতেই আউট হন সাকিব।
আফগানিস্তানের পেসার করিম জানাতের বলে লং-অনে মমিনুলকে ক্যাচ দিলে ৩৭ বলে শেষ হয় সাকিবের ৫০ রানের ইনিংসটি। ৪টি চার ও ২টি ছক্কা দিয়ে নিজির ইনিংসটি সাজান বরিশালের অধিনায়ক। এরপর হৃদয়-ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন ব্রাভো ও উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান দলকে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৫ রান এনে দেন।
ব্রাভো ৬ বলে ১০ রান করেন। ২টি চারে ৩৭ বলে ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়। ৩ রানে অপরাজিত থাকেন নুরুল। কুমিল্লার তানভীর ২২ রানে ২ উইকেট নেন। এছাড়া মোস্তাফিজ-মঈন-জানাত ১টি করে উইকেট নেন।
১৫৬ রানের জবাবে শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। দ্বিতীয় ওভারেই কুমিল্লার অধিনায়ক ১ রান করা ইমরুলকে আউট করেন বরিশালের সাকিব। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আরেক ওপেনার লিটনকেও শিকার করে শুরুতেই কুমিল্লাকে চাপে ফেলে দেন সাকিব। চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৫৩ রান করা লিটন এবার ১৭ বলে ৪টি চারে ১৯ রানে সাজঘরে ফেরেন।
২৩ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারানোর চাপ সামলে উঠার আগেই মিডল-অর্ডার ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয়কে হারায় কুমিল্লা। ব্রাভোর শিকার হওয়ার আগে ৫ রান করেন জয়। জয়ের বিদায়ে উইকেটে এসেছিলেন ইংল্যান্ডের মঈন। উইকেটে সেট হতে সময় নিয়েছেন তিনি। তবে দশম ওভারে অফ-স্পিনার শান্তর বলে এক্সট্রা কভারে ব্রাভোকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মঈন। ১১ বলে ৬ রান করেন তিনি।
দলীয় ৫৮ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে আউট হন মঈন। এরপর ৭০ রানে পৌঁছাতে আরও ৩ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে কুমিল্লা। নাহিদুল ১ রানে রান আউট ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনীল নারাইন ৩ রান করে নাইম হাসানের শিকার হন। এক প্রান্ত আগলে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুললেও ৩০ রানের বেশি করতে পারেননি মমিনুল। নাইমের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ৩টি চার মারেন মমিনুল।
৭০ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর শেষ দিকে জানাতের ১৩ বলে ১৭ ও তানভীরের ১৪ বলে অপরাজিত ২১ রান কুমিল্লাকে বড় হারের মুখ থেকে রক্ষা করে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৩ রান করে কুমিল্লা।
বরিশালের নাঈম ২৯ রানে ৩ উইকেট নেন। সাকিব-ব্রাভোর শিকার ২টি করে উইকেট। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]