পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিংয়ের পকুর অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ও লিটন দাসের ব্যাটিং নৈপূণ্যে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের ১৮তম ম্যাচে বৃষ্টি আইনে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা।
টানা তিন ম্যাচের জয়ের পর নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে মিনিস্টার ঢাকার বিপক্ষে হারের স্বাদ পেয়েছিল কুমিল্লা। তবে ঢাকায় ফিরে আবার জয়ে ফিরলো বিপিএলের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। এখন সাথে এ জয়ে ৫ ম্যাচে ৪ জয় ও ১ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে থেকে আবারও টেবিলের শীর্ষে ফিরেছে কুমিল্লা।
বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৮ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৮ রান করে চট্টগ্রাম। ২৭ রানে ৫ উইকেট নেন মোস্তাফিজ। বৃষ্টির কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ ১৮ ওভারে নামিয়ে আনা হলে কুমিল্লা টার্গেট দাঁড়ায় ১৪৪ রান। তবে ৯ বল বাকি রেখেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কুমিল্লা।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস।
ইনিংসের তৃতীয় বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাঁদউইক ওয়ালটনকে খালি হাতে বিদায় করেন কুমিল্লার স্পিনার নাহিদুল ইসলাম। শুরুর ধাক্কা সামলে কুমিল্লার বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন আরেক ওপেনার ইংল্যান্ডের উইল জ্যাকস ও আফিফ হোসেন।
মারমুখী ব্যাট করে ৭ ওভারে ৬২ রান তুলেন জ্যাকস ও আফিফ। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের বলে ভাঙে জ্যাকস ও আফিফ জুটি ভাঙেন। ২২ বলে ২৬ রান করে বোল্ড হন আফিফ।
আফিফের পর শামিম হোসেন পাটোয়ারিকে নিয়ে আবারও বড় জুটির চেষ্টা করেন জ্যাকস। ১২ দশমিক ৫ ওভারের পর বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকায় ম্যাচটি ১৮ ওভারে নির্ধারিত হয়।
বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হলে জ্যাক-শামিম জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজ। ৩৮ বলে ৪৭ রান যোগ হওয়ার পর ভাঙে জুটি। ২২ বলে ২৬ রান করেন শামিম। ৪টি চার মারেন তিনি। শামিমকে আউটের পর চট্টগ্রামের ব্যাটিংয়ে ধস নামান মোস্তাফিজ। এরপর জ্যাকসহ চারটি উইকেট নেন ফিজ। এতে ১৮ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৮ রান করে চট্টগ্রাম।
জ্যাকস ৩৭ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন। বেনি হাওয়েল ৩, অধিনায়ক নাইম ইসলাম ৩ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৪ রান করে মোস্তাফিজের শিকার হন। ৪ ওভার বল করে ২৭ রানে ৫ উইকেট নেন ফিজ।
বৃষ্টি আইনে ১৮ ওভারে ১৪৪ রানের টার্গেট পায় কুমিল্লা। ১৪৪ রানের টার্গেটে পেয়ে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন লিটন দাস। আগের চার ম্যাচে চার নম্বরে নেমে ৫৪ রান করেন ইমরুল। এবার ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তন করে ওপেন করেন ইমরুল। এমন সিদ্ধান্তই কাজে লেগে ইমরুলের।
লিটনকে নিয়ে স্বাচ্ছেন্দ্যে ব্যাট করেন ইমরুল। পাওয়ার প্লেতে ৪৬ রান করেন তারা। এ সময় ২টি করে চার-ছক্কা মারেন ইমরুল। এরপর ১০ ওভারে ৭৬ রান পায় কুমিল্লা। ১২তম ওভারে মিরাজকে ছক্কা মেরে ৪২ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ইমরুল। একই ওভারে ইমরুল ও লিটন আরও একটি করে ছক্কা মারেন। এতে ১৯ রান উঠে।
স্পিনার নাসুমকে ১৫তম ওভারের শেষ বলে ছক্কা মেরে হাফ-সেঞ্চুরিতে পা রাখেন লিটন। এ ছক্কায় জীবন পেয়েছিলেন লিটন। ৩৫ বলে টি-টোয়েন্টিতে ১৫তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন লিটন। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে এবারের বিপিএলের একমাত্র হ্যাটট্টিকম্যান পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির বলে আউট হন তিনি। ৩৭ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৩ রান করেন লিটন।
লিটনের ফেরার ওভারের পরের দুই বলে ১০ রান তুলে কুমিল্লার জয় নিশ্চিত করেন ইমরুল। ৬২ বলে ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৮১ রানে অপরাজিত থাকেন ইমরুল। ম্যারেচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন মোস্তাফজুর রহমান।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]