কুমিল্লার হ্যাটট্রিক জয়, মিরাজ কাণ্ডের পর হারলো চট্টগ্রাম

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৪:০৬ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২২
কুমিল্লার হ্যাটট্রিক জয়, মিরাজ কাণ্ডের পর হারলো চট্টগ্রাম

নিয়মিত অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্ব হারানো নিয়ে ঘটে যাওয়া নাটকীয় ঘটনার পরের ম্যাচে হারের স্বাদ নিলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বিপরীতে আসরের ১৩তম ম্যাচে এসে নিজেদের খেলা তৃতীয় ম্যাচে টানা জয় তুলে নিলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৫২ রানে হারিয়ে দিয়েছে ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বাধীন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

একদিনের বিরতি শেষে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আবারও গড়ায় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের খেলা। দিনের প্রথম ম্যাচে টস প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক নাইম ইসলাম।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮৩ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। দলের পক্ষে ব্যাট হাতে অপরাজিত ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন ফাফ ডু প্লেসিস। এছাড়া ক্যামেরন ডেলপোর্টের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রানের আরেকটি অপরাজিত ইনিংস।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৭ দশমিক ৩ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে ১৩১ রান সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ফলে ৫২ রানের ব্যবধানে হ্যাটট্রিক জয় তুলে নেন কুমিল্লা। একই সঙ্গে এ জয়ে চট্টগ্রামকে হটিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠেছে কুমিল্লা।

ব্যাট হাতে কুমিল্লার ইনিংস শুরু করেন লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় ওভারেই জয়কে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান চট্টগ্রামের স্পিনার নাসুম আহমেদ। কভারে সাব্বির রহমানকে ক্যাচ দেন জয়। জয় ফেরার পর ডু-প্লেসিসকে নিয়ে কুমিল্লার রানের চাকা সচল রাখেন এবারের আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা লিটন।

লিটন-ডু প্লেসিসের মারমুখী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৫২ রান পায় কুমিল্লা। ১০ ওভার শেষে কুমিল্লার রান হয় ৮২। এ জুটি ভাঙতে ছয় বোলার ব্যবহার করেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক নাইম ইসলাম। অবশেষে ১১তম ওভারে আবারো চট্টগ্রামকে উইকেট শিকারের আনন্দে ভাসান নাসুম। নিজের শেষ ওভার করতে এসে লিটনকে তুলে নেন নাসুম। ৩৪ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রান করেন লিটন। ডু-প্লেসিসের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৫ বলে ৮০ রান যোগ করেন লিটন।

এ ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েলের বলে বোল্ড হয়ে ১ রানে ফিরেন ইমরুল। ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে ইমরুলের বিদায়ে ক্রিজে ডু-প্লেসিসের সঙ্গী হন ডেলপোর্ট। ১৫তম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৪৫তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলেন ডু-প্লেসিস। এ জন্য ৪০ বল খেলেছেন তিনি।

১৬ ওভারের পর থেকে দ্রুত রান তুলেন ডু-প্লেসিস ও ডেলপোর্ট। ১৬ থেকে ১৯তম ওভার পর্যন্ত ৫৩ রান নেন তারা। শরিফুলের করা শেষ ওভারের প্রথম পাঁচ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কা হাকান ডেলপোর্ট। এতে ২২ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৩১তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান ডেলপোর্ট। ইনিংসের শেষ বলে ১ রান নিতে পারেন তিনি। ফলে ৩ উইকেটে ১৮৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় কুমিল্লা।

ডু-প্লেসিসের ইনিংসে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান ডেলপোর্ট। চট্টগ্রামের নাসুম ২৩ রানে ২ উইকেট নেন। আগের ম্যাচে বিপিএলের অভিষেকেই হ্যাটট্টিক করা চট্টগ্রামের পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ছিলেন উইকেটশূন্য।

গত ম্যাচে ২০২ রান করা চট্টগ্রামের জন্য ১৮৪ রানের টার্গেট সহজই হওয়ার কথা ছিল। তবে অধিনায়ক নিয়ে ঘটে না যাওয়া নাটকীয় ঘটনায় আত্মবিশ্বাস হারিয়ে বসা চট্টগ্রাম খেই হারিয়ে ফেলে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেনার লুইসকে ও নবম বলে আফিফ হোসেনকে হারায় চট্টগ্রাম। লুইস ৪ রান করে কুমিল্লার স্পিনার নাহিদুল ইসলামের এবং আফিফ ৪ রান করে বাঁ-হাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার হন।

শুরুর ধাক্কাটা সামলে ওঠার চেষ্টা করেও সফল হয়নি চট্টগ্রামের পরের দিকের ব্যাটাররা। কুমিল্লার বোলাররা চেপে ধরে চট্টগ্রামের মিডল-অর্ডার ব্যাটারদের। এতে ৭২ রানে ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে। সাব্বির রহমান ৫ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ১০ রান করে নাহিদুলের শিকার হন। চট্টগ্রামের অধিনায়ক নাহিদুলকে ৮ রানে ফেরান শহিদুল। আর হাওয়েলকে বিদায় করে কুমিল্লার জয়ের পথ প্রশস্থ করে ফেলেন বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। তানভীরের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২ রান করেন তিনি।

সতীর্থদের যাওয়া আসার মাঝেও অন্যপ্রান্ত আগলে রেখে ইনিংস বড় করেছেন ইংল্যান্ডের ওপেনার উইল জ্যাকস। ১৫তম ওভারে শহিদুলকে পরপর তিনটি চার মেরে হাফ-সেঞ্চুরিও পূর্ণ করেন জ্যাকস। কুমিল্লার জয়ের পথে কাটা হিসেবেই ক্রিজে ছিলেন তিনি। তবে ১৬তম ওভারে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে জ্যাকসকে ফিরিয়ে দিয়ে কুমিল্লার জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন তানভীর।

৪২ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৯ রান করেন জ্যাকস। তার ইনিংসটি চট্টগ্রামের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৩ ওভারে ১৩১ রানে গুটিয়ে যায়। কুমিল্লার নাহিদুল ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া ২টি করে নেন মোস্তাফিজুর-তানভীর-শহিদুল। ম্যাচ সেরা হন কুমিল্লার ডু-প্লেসিস।

স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস

[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]



শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

নানা নাটকীয়তার পর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সাথে থাকছেন মিরাজ

নানা নাটকীয়তার পর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সাথে থাকছেন মিরাজ

বিপিএল অভিষেকেই মৃত্যুঞ্জয়ের হ্যাটট্টিক

বিপিএল অভিষেকেই মৃত্যুঞ্জয়ের হ্যাটট্টিক

মুশফিকের রিভার্স সুইপ, তীরে গিয়ে বরিশালের কাছে হারলো খুলনা

মুশফিকের রিভার্স সুইপ, তীরে গিয়ে বরিশালের কাছে হারলো খুলনা

বিপিএলের আত্মবিশ্বাস আফগানিস্তান সিরিজে কাজে লাগবে : সোহান

বিপিএলের আত্মবিশ্বাস আফগানিস্তান সিরিজে কাজে লাগবে : সোহান