বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) অপ্রত্যাশিতভাবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়কত্ব থেকে ছিটকে পড়ে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মায়ের অসুস্থতার কথা বলে বিসিবির প্রধান নির্বাহীকে ই-মেইলও করেছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত মালিকপক্ষের সাথে সমঝোতা হওয়ায় দলের সাথে থেকে গেছেন মিরাজ। তবে আসরে আর নেতৃত্বের দায়িত্ব নেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
বিপিএলে শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে ম্যাচে নাটকীয়ভাবে মিরাজকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয় চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষ। ওই ম্যাচে মিরাজের পরিবর্তে টস করতে নামেন নাঈম ইসলাম। সে সময় তিনি বলেন, “মিরাজ তার খেলায় মনোযোগ দিতেই অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন।”
চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ জানায়, কাউন্টি দল লিস্টারশায়ারে যোগ দিতে লন্ডন ফিরে যাওয়া কোচ পল নিক্সনের পরামর্শেই নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে জানা যায়, মিরাজকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয় চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকপক্ষ। এতে বিদায়ী কোচ নিক্সনের কোনো হাত ছিল না।
ঘোলাটে পরিস্থিতির মাঝে স্ত্রী ও লাগেজ নিয়ে ঢাকা উদ্দেশে মিরাজ হোটেল থেকেও বের হন। তবে টিম কর্তৃপক্ষ তাকে ফিরেয়ে আবারও হোটেলে নিয়ে যান। হোটেল থেকে বের হয়ে মিরাজ বলেন, “আমি ইতোমধ্যেই বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে ই-মেইল করে জানিয়েছি। আমি আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় ফিরছি।”
তবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে না খেলার সিদ্ধান্তের পেছনে দলের চিফ অপারেটিং অফিসার ইয়াসির আলমের ‘খামখেয়ালিপানা’কে দায়ী করে মিরাজ। তিনি বলেন, “ইয়াসির যদি দলে থাকে আমি খেলবো না। আপনি প্রয়োজনে কোচকে ফোন দেন, কোচের সাথে আমার আজকে ৩০ মিনিট কথা হয়েছে। কোচ আমাকে বলেছে ইয়াসিরের পুরো বিবৃতি মিথ্যা। সবচেয়ে বড় কালপ্রিট সে। মালিকপক্ষকে কেবল ব্যবহার করা হচ্ছে। উনাকে যেভাবে বলা হচ্ছে উনি সেভাবে করছে।”
বিষয়টি নিয়ে মিরাজকে সাথে নিয়ে রাতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম রিফাতুজ্জামান। সে সময় তিনি জানান, পুরো বিষয়টি একটি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। যা এখন মিমাংসা হয়ে গেছে।
কে এম রিফাতুজ্জামান বলেন, “এখানে ভুল বোঝাবুঝি ছিল। যেখান থেকে আসলে একটা গ্যাপ তৈরি হয়ে যায়। বিষয়টা তেমন বড় কিছু ছিল না। যদি আগে কথা বলা হতো তাহলে এসব সমস্যা তৈরি হতো না। এখন আমরা কথা বলে সেগুলো সমাধান করেছি, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি।”
মিরাজের মূল অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “ইয়াসির দিক থেকেও কিছু ভুল ছিল, সেগুলো ব্যাখ্যা করেছে এবং সে সরি বলেছে। কোন জায়গাগুলোতে গ্যাপ ছিল সে স্পষ্ট করেছে, তারা দু’জন কথা বলেছে। এগুলো আমার সামনেই হয়েছে এবং সমাধান হয়েছে।”
‘ভুল বোঝাবুঝি’র অবসান হওয়ায় ঢাকায় না ফিরে দলের সাথেই থাকছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমাকে আগে জানানো হলে এ সমস্যা হতো না। এটা তাদের দল, তারা যাকে ইচ্ছা তাকে অধিনায়ক করবে, এটা তাদের ব্যাপার। তবে আমি তো তাদের কাছে অধিনায়কত্ব চাইনি। এখন সরিয়ে দিয়েছে এটাও বিষয় না। শুধু আগে না বলাতে আমি কষ্ট পেয়েছি। যে কোনো ক্রিকেটারই এতে কষ্ট পাবে।”
দলের সাথে থাকলেও আসরে আর অধিনায়কত্ব করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মিরাজ। বলেন, “এখন যদি আমাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, সত্যি কথা বলতে আমি করবো (অধিনায়কত্ব) না। আমি এখন একজন খেলোয়াড় হিসেবে খেলবো। আমাকে যদি পরবর্তীতে ম্যানেজমেন্ট থেকেও অধিনায়কত্ব দেওয়া হয় তাহলেও আমি করবো না।”
বিপিএলে এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচে তিন জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। মিরাজের নেতৃত্বে চার ম্যাচে দু’টিতে জয় ও দু’টিতে হার ছিল। আর সর্বশেষ নাঈম ইসলামের নেতৃত্বে জয় পেয়েছে দলটি।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]