বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারার পর টানা দুই ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। তবে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে নিজের প্রথম ম্যাচে নিতে হলো হারের স্বাদ। স্বাগতিক চট্টগ্রামকে হারিয়ে দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে মুশফিকুর রহিমের খুলনা টাইগার্স। চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে খুলনা টাইগার্স।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) আসরের নবম ও চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং খুলনা টাইগার্স। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৩ রান করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। জবাবে ৭ বল বাকি রেখেই ৬ উইকেটে জয় তুলে নেয় খুলনা টাইগার্স।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ব্যাট করতে নেমে খুলনার বঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদের নৈপুণ্যে শুরুটা ভালো করতে পারেনি চট্টগ্রাম। আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেনার লুইসকে ১ রানে সাজঘরে ফেরান নাবিল।
ম্যাচের শুরুতেই লুইসকে হারানোর ধাক্কাটা ভালোভাবেই সামলে উঠেন আরেক ওপেনার ইংল্যান্ডের উইল জ্যাকস ও তিন নম্বরে নামা আফিফ হোসেন। পাওয়ার প্লেতে দলের স্কোর ৪৬ রানে নিয়ে যান তারা। সাচ্ছেন্দ্যে ব্যাট করে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন জ্যাকস ও আফিফ। তবে দলীয় ৬০ রানে ও নবম ওভারে জ্যাকস-আফিফ জুটি ভাঙেন খুলনার শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা।
স্লোয়ার ডেলিভারিতে ২৮ রান করা জ্যাকসকে আউট করেন পেরেরা। ২৩ বল খেলে ৪টি চার মারেন জ্যাকস। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন জ্যাকস ও আফিফ। জ্যাকসের আউটের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। ১০০ রানের আগেই ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে বসে দলটি।
উইকেটে গিয়ে সেট হয়েছিলেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। খুলনার স্পিনার মাহেদিকে ছক্কা মারতে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মিরাজ। ১০ বলে ৬ রান করেন তিনি। ঢাকা পর্বের তিন ম্যাচে দলের প্রয়োজনে শেষ দিকে দুর্দান্ত ব্যাট করা ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল, এবার ব্যর্থ হন। পেরেরার স্লোয়ার ডেলিভারির সামনে আত্মসমর্পণ করে বিদায় নেওয়ার আগে করেন ৫ রান।
সতীর্থদের যাওয়া আসার মাঝে ব্যাট হাতে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন আফিফ। কিন্তু দলের বিপর্যয়ের সময় বিদায় নেন আফিফও। রেজাকে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে মাহেদির দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন ৩৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৪ রান করা আফিফ। শেষ দিকে নাঈম ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম দ্রুত রান তুলে চট্টগ্রামকে লড়াই করার পুঁজি এনে দেন।
কামরুলের করা শেষ ওভার থেকে ১৭ রান তুলেন তারা। এতে ৮ উইকেটে ১৪৩ রান পায় চট্টগ্রাম। ১৯ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ২৫ রান করেন নাঈম। ১টি করে চার-ছক্কায় ৬ বলে অনবদ্য ১২ রান তুলেন শরিফুল। খুলনার পেরেরা ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৪৪ রানের জবাবে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় খুলনা। ১ রান করে চট্টগ্রাম পেসার শরিফুল ইসলামের শিকার হন ওপেনার সৌম্য সরকার। শুরুর ধাক্কা সামলে উঠে খুলনাকে পরবর্তীতে খেলায় ফেরান আরেক ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে ফ্লেচার ও তিন নম্বরে নামা রনি তালুকদার। পাওয়ার প্লেতে ৪৩ রান পায় খুলনা।
তবে অষ্টম ওভারে চট্টগ্রামকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। ওই ওভারের তৃতীয় বলে লেগ বিফোর হন রনি। তবে চট্টগ্রাম পর্ব থেকে যুক্ত হওয়া এডিআরএস নিয়ে বেঁচে যান রনি। জীবন পেয়ে সেটি কাজে লাগাতে পারেননি রনি। পঞ্চম ডেলিভারিতে জ্যাকসকে ক্যাচ দিয়ে আউটন তিনি। ১৮ বলে ১৭ রান করে নাসুমের প্রথম শিকার হন রনি।
দলীয় ৫২ রানে রনির আউটের পর ফ্লেচারকে নিয়ে খুলনার জয়ের পথ সহজ করেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী না হয়ে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন তারা। ৪৩তম বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৮তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান ফ্লেচার।
হাফ-সেঞ্চুরির পরই মিরাজকে ছক্কা মারেন ফ্লেচার। তবে পরের ডেলিভারিতে বিদায় ঘটে তার। আবারও ছক্কা মারতে গিয়ে জ্যাকসকে লং-অনে ক্যাচ দেন ফ্লেচার। ৪৭ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৮ রান করেন তিনি। দরের জয়ে এমন অবদান রাখায় ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি।
ফ্লেচার যখন ফিরেন তখন জয়ের জন্য খুলনার দরকার ছিল ৩৪ বলে ৪৬ রান। শরিফুলের করা ১৭তম ওভারে ৩টি চারে ১৬ রান তুলেন মুশফিক। ১৮তম ওভারে রেজাউরকে দু’টি ছক্কায় ১৪ রান নেন লঙ্কান সেক্কুজে প্রসন্ন। এতে শেষ ২ ওভারে মাত্র ৪ রান দরকার পড়ে খুলনার।
১৯তম ওভারে প্রসন্ন আউট হলেও জয় পেতে সমস্যা হয়নি খুলনার। ৩০ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৪ রান করেন মুশফিক। ১৫ বলে ২৩ রান করেন প্রসন্ন। চট্টগ্রামের মিরাজ ২৪ রানে ২টি উইকেট নেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]