স্পোর্টসমেইল২৪.কমে কিছুদিন আগেই স্বাধীন বাংলার ফুটবল দলের খেলোয়াড় লুৎফর রহমানকে নিয়ে ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের লুৎফর রহমানের পাশে কেউ নেই!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এবার যশোরের সেই অহংকার লুৎফর রহমানের পাশে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জীবনের অন্তিম শয্যায় যখন চিকিৎসার অভাবে বিছানায় পড়ে ছিলেন ঠিক তখনই মিডিয়া এবং কয়েকজন ক্রীড়া সংগঠকের বদৌলতে খবর পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রীর কানে। শোনা মাত্রই মুজিব নগর ক্রীড়া সমিতির সম্পাদক স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এ বীরের চিকিৎসার জন্য ৩০ লক্ষ টাকার অনুদান দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৫ জুলাই) বঙ্গভবনে লুৎফর রহমানের স্ত্রী ওয়াজেদার হাতে ২৫ লক্ষ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং ৫ লক্ষ টাকা নগদ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাবেক বিকেএসপির চিফ কোচ কাওসার আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে লুৎফর রহমানের স্ত্রী ওয়াজেদা বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রী আজ তার যোগ্য সম্মান দিয়েছেন। এতকাল মানুষটা (লুৎফর রহমান) বিছানায় পড়ে আছে যশোরের কোন নেতা, এমপি, খেলোয়াড় কেউ এসে খবর নেয়নি।
পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধকালীন প্রথম ফুটবল দল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশ স্বাধীনের বহু আগেই বিদেশের মাটিতে দেশের জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তলন করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত অর্জন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে ৩৪ জন খেলোয়াড়, ম্যানেজার এবং কোচসহ সর্বমোট ৩৬ জন নিয়ে গড়া টিমের অন্যতম সদস্য লুৎফর রহমান।
১৯৫১ সালে জন্মগ্রহণকারী লুৎফর রহমান মুজিবনগরে গঠিত বাংলাদেশ ক্রীড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। ছোটবেলা থেকে ফুটবল এবং হকি খেলায় আগ্রহী এবং পারদর্শী ছিলেন। যশোর জিলা স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালীন তিনি স্কুলের এক খেলায় শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়ের পুরষ্কার পান।
১৯৬৫ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত যশোর জেলা ফুটবল দলের হয়ে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া ১৯৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান বোর্ড দলের পক্ষে পশ্চিম পাকিস্তানের সম্মিলিত বোর্ডের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা ওয়ারী ক্লাবে যোগ দেন এবং ১৯৭০-এ দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে রাশিয়ার মিনস্ক ডায়নামো ফুটবল দলের বিরুদ্ধে খেলায় অংশগ্রহণ করেন লুৎফর রহমান।
মো. জামাল হোসেন, যশোর