জেলা প্রতিনিধি
নড়াইলে সদর হাসপাতালে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজার ঝটিকা অভিযান করে দেখেছেন চিকিৎসা সেবার বাস্তব চিত্র।
খেলোয়াড়ি জীবনে যেমনি নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য খেলেন, তেমনি জনপ্রতিনিধি মাশরাফিকে নড়াইলবাসী দেখলো সম্পূর্ণ ভিন্ন চরিত্রে। জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগদানের আগে দুদিনের নির্বাচনী এলাকায় সফরে মাশরাফি সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন হাসপাতালকে।
কাউকে কিছু না জানিয়ে ২৫ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা ২ ঘন্টা নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে ঝটিকা সফর করেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তুজা ।
হাসপাতলে এসে ডাক্তারদের অবস্থান জানতে চেয়ে হাজিরা খাতা দেখেন। হাজিরা খাতায় সার্জারী চিকিৎসক সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা.আকরাম হোসেনের ৩ দিনের অনুপস্থিতির প্রমাণ পেয়ে ছুটির আবেদন দেখতে চান। পরে জানতে পারেন ছুটি ছাড়াই সেই ডাক্তার ৩ দিন অনুপস্থিত।
এ সময় তিনি রোগী সেজে ওই চিকিৎসককে ফোন করলে তিনি রোগীকে অর্থাৎ নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তুজাকে রবিবার হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে বলেন। এ সময় নিজের পরিচয় দিয়ে এমপি মহোদয় ডাক্তারকে বলেন, ‘এখন যদি হাসপাতালের সার্জারী প্রয়োজন হয় তাহলে সেই রোগী কী করবে?’
এরপর সেই ডাক্তারকে তার কর্তব্যর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দ্রতু কর্মস্থলে ফিরে আসার নির্দেশ দেন তিনি।
এরপর নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তুজা নারী ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীদের সাথে কথা বলে তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের সমস্যা শোনেন। ওই সময় পুরো হাসপাতালে মাত্র একজন ডাক্তারের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে নাখোস হন।
সদর হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে মাত্র ২ জন নার্স দেখে তাদের ডিউটির ব্যাপারে খোঁজ নেন। জানতে পারেন হাসপাতালে পর্যাপ্ত নার্স থাকলেও ২-১ জন নার্স দিয়েই বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিচালিত হচ্ছে।
ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক নিচে নেমে এসে নার্সিং সুপারভাইজারদের খোঁজ করেন মাশরাফি। নার্সদের কক্ষে তালা দেখতে পেয়ে টেলিফোনে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। এসময় একজন সুপারভাইজারের ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং অপরজনের ফোন খোলা থাকলেও রিসিভ করেননি।
রোগীদের অনুরোধে হাসপাতালের বাথরুম ও তার পরিবেশ নিজে দেখেন এবং মোবাইলে ছুবি তুলে নেন। কয়েকটি বাথরুমের দরজা ভাঙ্গা এবং দূর্গন্ধ তাকে অত্যন্ত বিবব্রত করে তোলে। নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তুজা এ ব্যাপারে জানার জন্য আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারকে ফোন করতে বলেন। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর বিথী খাতুন এসময় অফিসে উপস্থিত থেকে মাশরাফির নানা প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি জানতে পারেন, হাসপাতালের চিকিৎসক সংকট থাকলেও নার্সের কোনো সংকট নেই। এই মুহূর্তে ৭৩ জন নার্স রয়েছে ওই হাসপাতালটিতে।
এমন ভুমিকায় দারুন প্রশংশিত হয়েছেন সচেতন মহলেনড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তুজা। এমপি মহোদয়ের এই উদ্যোগ নিয়ে ইতোমধ্যে ফেসবুকে প্রসংশিত কমেন্ট পেয়েছেন।
এফ এম আমিরুল ইসলাম তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, নড়াইলের মানুষের স্বপ্ন পূরনের কান্ডারী আমাদের সবার প্রিয় মাশরাফি এমপি।
তিনি নড়াইলের মানুষের প্রত্যাসা পুরনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন যখনই খেলার অবসরে সময় পাচ্ছেন তখনই নড়াইলের জন্য কোথায় কার কাছে গেলে পাওয়া যাবে সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন।
ব্যাস্ততার মাঝেও নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে যেতে ভুল করেন নাই সেখানে ছদ্মবেশ ধারন করে ঘুরে এসেছেন হাসপাতালের সকল অনিয়ম বন্ধ করার ঘোষনা দিয়েছেন। নড়াইলে সেবার মান চরম খারাপ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আমরা আশাবাদী ৪৮ বছরে যেটা নড়াইলের মানুষ পায় নাই সেটা এবার পাবে আর এটা মাশরাফি যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন এটা চলমান থাকবে।
নড়াইলের সুধীসমাজ সাংবাদিক মহলসহ সকল শ্রেনী পেশার মানুষ নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তুজার এমন কর্মকান্ডে সন্তোষ্ট প্রকাশ করে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এমন ভাবেই যেন এমপি আমাদের নড়াইলের উন্ন্য়ন অব্যাহত রাখেন।
হাফিজুল নিলু, নড়াইল
