দীর্ঘ ৭ বছর পর শেরপুরে শুরু হচ্ছে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ। শেরপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ১৪ মে (রোববার) উদ্বোধনী ম্যাচের মধ্য দিয়ে এ লিগের পর্দা উঠবে। লিগের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে মিমোজা ক্লাব ও ক্রিকেট ক্লাব।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার তালিকাভুক্ত ৮টি ক্লাব এবারের প্রথম বিভাগ লিগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। বৃহস্পতিবার (৪ মে) লিগের ফিক্সার ও বাইলজ (উপ-বিধি) প্রকাশ করা হয়েছে
লিগের প্রতিটি ম্যাচ হবে ওয়ানডে নিয়মে, ৫০ ওভারের। ম্যাচগুলো হবে সাদা বল, রঙিন পোষাকে। জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়াম ভেন্যুর টার্ফ উইকেটে লিগের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার নব-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত বলেন, সারা বছর আমরা মাঠে খেলা রাখতে চাই। ইতিমধ্যে ১৫টি দল নিয়ে দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগের খেলা শেষ হয়েছে। এ মাসের মাঝামাঝি ৮টি দল নিয়ে শুরু হচ্ছে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ।
তিনি আরও বলেন, প্রথম বিভাগের খেলা শেষ হওয়ার পর অনুষ্ঠিত হরে প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট। প্রথমবারের মতো আয়োজিত প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে ৬টি ক্লাব অংশগ্রহণ করছে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সূত্রগুলো জানায়, শেরপুরে সর্বশেষ ২০১৬ সালে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ক্রিকেট লিগের খেলা বন্ধ ছিল।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নান্দনিক নকশায় শেরপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়ামের পুর্ণাঙ্গ গ্যালারি, ভিআইপি গ্যালারি, প্যাভিলিয়ন, মিডিয়া সেন্টার, প্লেয়ার্স লাউঞ্জ, ভিভিআইপি বক্স, অত্যাধুনিক ড্রেসিং রুম, মাঠ সংস্কারসহ নির্মাণ কাজ শেষ করার পর বিসিবির পক্ষ থেকে দু’টি টার্ফ উইকেট নির্মাণ করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে ঘাস কাটার মেশিন, বাউন্ডারি রোপ সহ নানা সরঞ্জামাদি।
বর্তমানে মাঠে ফ্যাসিলিটিজ অনেকগুণ বেড়ে গেছে। এছাড়া সম্প্রতি জেলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হওয়ায় শেরপুরের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন উদ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অধিভুক্ত ক্লাবগুলোর নেতৃত্বেও পরিবর্তন এসেছে। এতে গতি ফিরেছে ক্লাবগুলোর কর্মকাণ্ডেও। ধনাঢ্য অনেকেই ক্লাবের সাথে যুক্ত হওয়ায় খেলোয়াড়রাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। যার প্রেক্ষিতে এবারের প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ বেশ জমজমাট হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকরা।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট উপ-কমিটির সম্পাদ তৌহিদুর রহমান পাপ্পু বলেন, প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের ৮টি দল লটারির মাধ্যমে দু’টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গ্রুপের দলগুলো রাউন্ড রবীন লিগ ভিত্তিতে খেলবে।
দুই গ্রুপের ১ম ও ২য় স্থান অর্জনকারী দু’টি করে ৪টি দল সেমি-ফাইনালে খেলবে। সেমি-ফাইনালের বিজয়ী দুই দল ফাইনালে খেলবে। প্রথম বিভাগ লিগের চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দল পরের বছরের জন্য প্রিমিয়ার লিগে উত্তীর্ণ হবে। সেইসাথে দুই গ্রুপের সর্বনিন্ম স্থান অর্জনকারী দু’টি দল রেলিগেটেড হয়ে দ্বিতীয় বিভাগে নেমে যাবে।
তৌহিদুর রহমান পাপ্পু জানান, প্রথম বিভাগ লিগে কোন বহিরাগত খেলোয়াড় খেলতে পারবে না। স্থানীয় খেলোয়াড়রাই এ লিগে খেলবেন। এক খেলোয়াড়, এক লিগ-এই নীতিতে কোন খেলোয়াড় জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোন এক লিগে কোন ক্লাবের পক্ষে নিবন্ধিত হলে সেই লিগ ও ক্লাব ছাড়া অন্য কোন ক্লাব কিংবা লিগে অংশ নিতে পারবে না।
লিগে অংশ নেওয়া দলগুলো হলো- ‘ক’ গ্রুপে শেরপুর ক্রিকেট ক্লাব, মিমোজা স্পোর্টিং ক্লাব, কাকলি স্পোর্টিং ক্লাব ও উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাব। ‘খ’-গ্রুপে খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি, মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্র, চকপাঠক ক্রীড়াচক্র ও সোনালী ক্লাব।
হাকিম বাবুল, শেরপুর/আরএস