ভিন্নধর্মী আয়োজনে শেরপুরে পালিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস। জেলার অস্বচ্ছল, দরিদ্র পরিবারের মেধাবী তরুণদের খেলাধুলায় উৎসাহ যোগাতে ২৫ জন ক্ষুদে খেলোয়াড়কে বাইসাইকেল উপহার দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অর্থায়নে জেলার ক্রীড়া সংস্থা ও জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ১৫ জন বালক ও ১০ জন বালিকাকে বাইসাইকেল প্রদান করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) শেরপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়ামে এসব ক্ষুদে খেলোয়াড়দের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে বাইসাইকেল তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ ও জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস প্রিয়া ক্ষুদে খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ বলেন, শেরপুর থেকে এখন অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় উঠে আসছে। বিশেষ করে জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি, ফুটবলার আতিক, কিরণ, অ্যাথলেট জহিরের মতো খেলোয়াড়রা শেরপুরের নাম উজ্জ্বল করেছে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষুদে খেলোয়াড়রা অনেক সময় দূর থেকে স্টেডিয়ামে এসে প্র্যাকটিস করে। তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বাইসাইকেল প্রদান করা হলো। যতদিন তারা প্র্যাকটিস করবে, ততদিন সাইকেলটি তাদের কাছে থাকবে। পরবর্তীতে প্র্যাকটিস শেষে সাইকেলটি ক্রীড়া সংস্থার কাছে ফেরত দিবে, যেন অন্যজন সেটি ব্যবহার করতে পারে।
ডিএসএ সচিব মো. জিন্নত আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোক্তাদিরুল আহমেদ, প্রেস ক্লাব সভাপতি শরিফুর রহমান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান নাসরিন রহমান, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদিকা কহিনূর বেগম বিদ্যুৎ, সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাইসাইকেল পেয়ে আনন্দিত তরুণ ক্রীড়াবিদরা। ক্রিকেটার রুনা জানায়, ‘আমি বড় ক্রিকেটার হতে চাই, জ্যোতি (নিগার সুলতানা জ্যোতি) আপার মতো জাতীয় দলে খেলতে চাই। এ জন্য আমি ১০/১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস করতে আসি। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় প্রতিদিন আমার পক্ষে নিয়মিত প্র্যাকটিসে আসা সম্ভব হতো না। অনেক সময় আর্থিক সংকটও থাকে। সাইকেলটি পেয়ে আমার খুব উপকার হলো।’
শ্রীবরদীর বালিয়াচন্ডি গ্রামের ক্ষুদে ফুটবলার সাদ মিয়া জানায়, সে বড় ফুটবলার হতে চান। তবে স্টেডিয়ামে এসে নিয়মিত প্র্যাকটিস করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। একেতো দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান, তার ওপর বাড়ি প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। ইচ্ছা থাকলেও নিয়মিত প্র্যাকটিসে আসা হতো না। সাইকেলটি তার নিয়মিত অনুশীলনে খুব কাজে দেবে এবং তার ফুটবলার হয়ে ওঠার পেছনে অনেক সহায়তা করবে বলে সে উল্লেখ করেন।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত বলেন, অস্বচ্ছল পরিবারের মেধাবী খেলোয়াড়দের অনুশীলনের মাঠে আসা যাওয়ার জন্য সাইকেল দেওয়ার উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ ও জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস প্রিয়া মহোদয় শিশু দিবসের দিনে এসব উপহারের সাইকেল প্রদান এক ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে।
এর মাধ্যমে শেরপুরের তরুণ খেলোয়াড়রা খেলাধুলায় উৎসাহিত হবে এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহের সৃষ্টি হবে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসনকে অভিনন্দন জানান তিনি।
স্পোর্টসমেইল২৪/শেরপুর/আরএস