বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের কাছে ৩৬ রানে হেরেছে মিনিস্টার রাজশাহী।এ হারে প্লে-অফ এবং টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়লো রাজশাহী। নিজেদের ৮ ম্যাচে মাত্র ৪ পয়েন্ট অর্জন করেছে তারা।
রাজশাহীর সাথে প্লে-অফে খেলার দৌঁড়ে ছিল একমাত্র ফরচুন বরিশাল। নিজেদের শেষ ম্যাচে ঢাকাকে হারিয়ে তারা প্লে অফ নিশ্চিত করায় রাজশাহীর বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার (১২ ডিসেম্বর) দিনের প্রথম ম্যাচে টস জিতে চট্টগ্রামকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় রাজশাহী। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৫ রান করে চট্টগ্রাম। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৯ রান করে ম্যাচ হারে রাজশাহী।
ব্যাট হাতে ইনিংস শুরু করে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন চট্টগ্রামের দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। পাওয়ার প্লে’তে ৪৮ রান তুলেন তারা। দু’জনই ২২ রান নিয়ে ক্রিজে ছিলেন। ১২তম ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে দলের স্কোর শতরানে স্পর্শ করান লিটন। তখন লিটন-সৌম্য হাফ-সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় ছিলেন।
লিটন ৪৬ ও সৌম্যের সংগ্রহে ৪৮ রান ছিল। ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন সৌম্য। ৪০ বলে অর্ধশতক করেন তিনি। গত ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ৬২ রান করেছিলেন। ১৪তম ওভারের প্রথম বলে এবারের আসরে তৃতীয়বারের হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান লিটন। ৩৮ বল-এ হাফ-সেঞ্চুরিতে পা রাখেন তিনি। ঐ ওভারের পঞ্চম বলে লিটন-সৌম্যর জুটি ভাঙেন ডান-হাতি মিডিয়াম পেসার রাজশাহীর আনিসুল ইসলাম ইমন। তখন চট্টগ্রামের রান ১২২।
৪৮ বলে ৬৩ রান করে আউট হন সৌম্য। ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা দিয়ে নিজের ইনিংস সাজান তিনি।
পরের ওভারে বিদায় হয় লিটনের। ডান-হাতি পেসার রেজাউর রহমান রেজা বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন লিটন। ১২৬ রানের মধ্যে দুই ওপেনার যখন বিদায় নেন তখন রাজশাহীর ইনিংসের ২৭ বল বাকি ছিল। ইনিংসের শেষ দিকে দ্রুত রান তুলে রাজশাহীকে বড় সংগ্রহ এনে দেন শামসুর রহমান। ১৮ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৩০ রান করেন তিনি। ৭ বলে ১টি ছক্কায় ১০ রানে অপরাজিত থাকেন জিয়াউর রহমান। মাঝে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ২ ও মোসাদ্দেক হোসেন ৩ রান করে আউট হন। রাজশাহীর ইমন ২১ রানে ২ উইকেট নেন।
প্লে-অফে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে ১৭৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে চট্টগ্রামের অফ-স্পিনার নাহিদুল ইসলামের ঘূর্ণিতে পড়ে রাজশাহীর টপ-অর্ডার দিশেহারা হয়ে পড়ে। পাওয়ার প্লেতে ৩৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে রাজশাহী। দুই ওপেনার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ১১, ইমন ৪ ও রনি তালুকদার ১৬ রান করে নাহিদুলের শিকার হন।
এরপর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ফজলে মাহমুদ ও নুরুল হাসান। দলকে ৬৯ রানে পৌঁছে দিয়ে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ১৯ রান করা ফজলেকে থামান বাঁ-হাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান। এরপর নুরুলের সাথে জুটি বেঁধে মারমুখী হয়ে উঠেন হার্ড-হিটার মেহেদি হাসান। ৩টি ছক্কা মেরে বিধ্বংসী হয়ে উঠার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চট্টগ্রামের বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলামের বলে আউট হন ১৭ বলে ২৬ রান করা মেহেদি।
পরের দিকে নুরুল ২৮ ও অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন ৯ রানে আউট হলে রাজশাহীর হার নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৯ রান পর্যন্ত যেতে পারে তারা। চট্টগ্রামের নাহিদুল ১৯ রানে ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাহিদুল।