ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার শাই হোপের সেঞ্চুরি বিফল করে শ্বাসরুদ্ধকর জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ১ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিকরা।
হোপের ১১৫ রানের সুবাদে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৮৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ১ উইকেট ও ৫ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে লঙ্কানরা। ২৬২ রানে ৮ উইকেট পতন হলেও সেখান থেকে এক প্রান্ত আগলে লঙ্কানদের জয় নিশ্চিত করেন আট নম্বরে নামা হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। ৩৯ বলে ম্যাচ জয়ী অপরাজিত ৪২ রান করেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
শনিবার সিরিজের প্রথম ম্যাচে কলম্বোতে টস জিতে প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় শ্রীলঙ্কা। শুরুতে ক্যারিবীয় ওপেনার সুনীল অ্যামব্রিস ৩ রানে ফিরলেও দলের রানের চাকা সচল রাখেন হোপ ও তিন নম্বরে নামা ড্যারেন ব্রাভো। দ্বিতীয় উইকেটে ৭৭ রানের জুটি গড়ে ব্যক্তিগত ৩৯ রানে থামেন ব্রাভো।
ব্রাভো ফিরলে ক্রিজে হোপের সঙ্গী হন রোস্টন চেজ। চেজকে নিয়েও বড় জুটি গড়েন হোপ। তৃতীয় উইকেটে ৮৫ রান যোগ করেন দু’জনে। ৪১ রান করে থামেন চেজ। তবে ১২৮তম বলে ৭৫ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নবম সেঞ্চুরি তুলে নেন হোপ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম হলেও এশিয়ার মাটিতে এটি তার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি।
হোপকে ব্যক্তিগত ১১৫ রানে থামান শ্রীলঙ্কার পেসার উসুরু উদানা। ১৪০ বল মোকাবেলা করে ১০টি চার মারেন হোপ। ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ২৩০ রানে হোপ বিদায়ের পর দলকে ৭ উইকেটে ২৮৯ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই টেল-এন্ডার কিমো পল ও হেইডেন ওয়ালশ। পল ১৭ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ৩২ ও ওয়ালশ ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৮ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন। শ্রীলঙ্কার উদানা ৮২ রানে ৩ উইকেট নেন।
২৯০ রানের টার্গেটে ব্যাট হাতে উড়ন্ত সূচনা করে শ্রীলঙ্কা। ১৮ ওভারে দলকে ১১১ রান এনে দেন দুই ওপেনার আবিস্কা ফার্নান্দো ও অধিনাক দিমুথ করুনারত্নে। দু’জনই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ফিরেন। ফার্নান্দো ৫৫ বলে ৫০ ও করুনারত্নে ৫৭ বলে ৫২ রান করেন।
দুর্দান্ত শুরুর পর শ্রীলঙ্কার মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন। কুশল মেন্ডিস ২০, সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ৫ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ১৮ রান করে ফিরেন। তবে এর মাঝেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন কুশল পেরেরা। কিন্তু ৫০ বলে ৪২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
৩৮তম ওভারে দলীয় ২১৫ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন পেরেরা। এ অবস্থায় উইকেটে আসেন হাসারাঙ্গা। তখন ক্রিজে ছিলেন থিসারা পেরেরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের ওপর চড়াও হন তিনি। ২২ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩২ রান করে বলের সাথে রানের ব্যবধান কমিয়ে আনেন পেরেরা। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে পেরেরা যখন আউট হন তখন জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার দরকার ৪৪ বলে ৩৭ রান।
এরপর দলীয় ২৬২ রানে আউট হন উদানা। এ অবস্থায় লক্ষণ সান্দাকানকে নিয়ে নবম উইকেটে ২৭ রান যোগ করে শ্রীলঙ্কাকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান হাসারাঙ্গা। কিন্তু জয় থেকে ১ রান দূরে থাকতে আউট হন সান্দাকান। শেষ পর্যন্ত শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে জয়ের স্বাদ পায় শ্রীলঙ্কা। ম্যাচ সেরা হয়েছেন হাসারাঙ্গা।