মুশফিকের ঢাকাকে বিদায় করে ফাইনালে চট্টগ্রাম

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ১০:১৫ এএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০
মুশফিকের ঢাকাকে বিদায় করে ফাইনালে চট্টগ্রাম

মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বেক্সিমকো ঢাকাকে বিদায় করে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে উঠলো গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে ঢাকাকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা।

টুর্নামেন্টের প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে চট্টগ্রামকে ৪৭ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে জেমকন খুলনা। এখন শুক্রবারের (১৮ ডিসেম্বর) ফাইনালেও খুলনার প্রতিপক্ষ হলো চট্টগ্রাম।

প্রথমে ব্যাট করা ঢাকাকে ১১৬ রানে অলআউট করে দেয় চট্টগ্রামের বোলাররা। চট্টগ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান ৩২ রানে ৩ ও শরিফুল ইসলাম ১৭ রানে ২ উইকেট নেন। জবাবে ৫ বল বাকি রেখে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় চট্টগ্রাম।

এলিমিনেটর ম্যাচে সোমবার প্রথমে ব্যাট করে ১৫০ রানের স্বল্প পুঁজি নিয়েও ফরচুন বরিশালকে হারিয়েছিল ঢাকা বেক্সিমকো। ফলে এ ম্যাচেও টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকা দলনেতা মুশফিক।

হার্ড-হিটার সাব্বির রহমানের সাথে ইনিংস শুরু করেন মুক্তার আলী। দলের হয়ে বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। সাব্বির ১১ বলে ১১ রান করে চট্টগ্রামের পেসার শরিফুল ইসলামের বলে আউট হন। অফ-স্পিনার নাহিদুল ইসলামের শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৭ রানে আউট হন মুক্তার। ১৯ রানেই পরপর দু’বলে আউট হন দুই ওপেনার।

দুই ওপেনারকে হারানোর পর দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ নাইম ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। উইকেট বাঁচিয়ে খেলে দলের স্কোর হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌঁছে দেন নাইম-মুশফিক। তবে দু’জনই বেশ ধীর গতিতে এগিয়েছেন। নবম ওভারের তৃতীয় বলে লিগ পর্বে সেঞ্চুরি করা নাইমকে ১২ রানে আটকে ফেলেন চট্টগ্রামের বাঁ-হাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান।

দলীয় ৫০ রানে নাইমের বিদায়ের পর ক্রিজে মুশফিকের সঙ্গী হন ইয়াসির আলি। দু’জনের কাছে বড় জুটির প্রত্যাশা ছিল দলের। কিন্তু সেটি হতে দেননি মোসাদ্দেক হোসেন। ২টি চারে ৩১ বলে ২৫ রান করা মুশফিকের শিকারি হন স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেন।

১৪তম ওভারে দলীয় ৭৫ রানের মুশফিকের আউটের পর ইয়াসির ও আকবরও ব্যর্থ হন। ফলে ঢাকার বড় স্কোরের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তাই-ই হয়েছে। শেষদিকে বাঁ-হাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের ৩ উইকেট শিকারে ১১৬ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় ঢাকা।

১৯তম ওভারে হ্যাটট্টিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে আল-আমিনকে ও তৃতীয় বলে নাসুমকে শিকার করেন তিনি। তার আগে ইয়াসির শিকার হয়েছিলেন ফিজের। ইয়াসির ২১ বলে ২৪ ও আল-আমিন ১৮ বলে ২৫ রান করেন। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩২ রানে ৩ উইকেট নেন।

ফাইনালে উঠতে ১১৭ রানের টার্গেট পায় চট্টগ্রাম। তবে পাওয়া-প্লেতে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি চট্টগ্রামের দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। ৬ ওভারে ৪২ রান তুলেন তারা। সপ্তম ওভারের শেষ বলে রান আউটের ফাঁদে পড়ে সৌম্য। ৫টি চারে ২৩ বলে ২৭ রান করেন তিনি।

সতীর্থকে হারানোর পর দলকে লক্ষ্যে পৌঁছানোর দায়িত্ব নেন লিটন ও অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। সতর্কতার সাথে এগোতে থাকেন তারা। ফলে ১০ ওভার শেষে চট্টগ্রামের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৫৯। ১৫ ওভার শেষেও অবিচ্ছিন্ন থাকেন লিটন ও মিঠুন। তখন রান হয় ৯০ রান। তবে ১৮তম ওভারের প্রথম বলে বিদায় ঘটে লিটনের। অফ-স্পিনার আল-আমিনের বলে সাব্বিরকে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন লিটন। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন লিটন-মিঠুন। বল খেলেছেন ৬১টি। ৪টি চারে ৪৯ বলে ৪০ রান করেন লিটন।

লিটন যখন ফিরেন তখন জয় থেকে ১৬ রান দূরে দাঁড়িয়ে চট্টগ্রাম। বল ছিল ১৭টি। এ সহজ কাজটি সম্পন্ন করেই মাঠ ছাড়ার সুযোগ ছিল অধিনায়কের। তবে সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুক্তার আলিকে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারির কাছেই সাব্বিরের তালুবন্দি হন মিঠুন। আগের বলেই এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মেরেছিলেন তিনি।

৩৫ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৪ রান করে আউট হন মিঠুন। এরপর দলের প্রয়োজনীয় ৯ রান তুলেছেন শামসুর রহমান ও মোসাদ্দেক। শামসুর ৮ ও মোসাদ্দেক ২ রানে অপরাজিত ছিলেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বেক্সিমকো ঢাকা : ১১৬/১০, ২০ ওভার (মুশফিক ২৫, আল-আমিন ২৫, মোস্তাফিজ ৩/৩২)
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম : ১১৭/৩, ১৯.১ ওভার (লিটন ৪০, মিঠুন ৩৪, আল-আমিন ১/৪)।

ফল : গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা : মোস্তফিজুর রহমান (গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম)।



শেয়ার করুন :