ক্যারিবীয় ওপেনার লেন্ডল সিমন্সের সেঞ্চুরিতে ১৭৫ রানের সংগ্রহ গড়েছিল সিলেট সানরাইজার্স। তবে সিমন্সের সেঞ্চুরিকে বিলিন করে দিয়েছেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। ব্যাট হাতে তামিমের অপরাজিত ১১১ রানের ইনিংসে ৯ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে মিনিস্টার ঢাকা। তামিম ছাড়াও অপরপ্রান্তে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন আফগানিস্তারের মোহাম্মদ শাহজাদ।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৫ রানের সংগ্রহ গড়ে সিলেট সানরাইজার্স। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১১৬ রান করেন ওপেনার লেন্ডল সিমন্স।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মিনিস্টার ঢাকা। দলের পক্ষে তামিম ইকবাল অপরাজিত ১১১ রানের সাথে মোহাম্মদ শাহজাদ ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন। দুই ওপেনারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১৮ বল বাকি থাকতেই ৯ উইকেটের জয় তুলে নেয় ঢাকা।
ব্যাট হাতে শুরুতেই ঢাকার বোলারদের উপর চড়াও হন সিলেটের দুই ওপেনার সিমন্স ও এনামুল হক বিজয়। ৩৫ বল খেলে দলের স্কোর ৫০-এ নিয়ে যান তারা। ১৬ বলে ১৮ রান করা এনামুলকে শিকার করে ঢাকাকে প্রথম উইকেট উপহার দেন পেসার এবাদত হোসেন। এরপর মিডল-অর্ডারে মোহাম্মদ মিঠুন ৬ ও দক্ষিণ আফ্রিকার কলিন ইনগ্রাম শূন্য রানে বিদায় নেন। ইনগ্রামকে রানের খাতা খুলতে দেননি ঢাকার পেসার মাশরাফি বিন মর্তুজা।
৬৫ রানে ৩ উইকেট পড়লেও ব্যাট হাতে মারমুখী মেজাজে ছিলেন সিমন্স। ৩৪ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৬০তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ইংল্যান্ডের রবি বোপারার সাথে চতুর্থ উইকেটে ৬৩ রান যোগ করেন সিমন্স। ১৩ রান করে আউট হন বোপারা। পঞ্চম উইকেটে সিলেটের অধিনায়ক মোসাদ্দেকের সাথে জুটি গড়ার সময় এবারের বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সিমন্স।
ব্যাট হাতে ৫৯ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলেন তিনি। বিপিএলের ইতিহাসে ২২তম সেঞ্চুরিম্যান হন সিমন্স। ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ১১৬ রান করেন এই ডান-হাতি ব্যাটার। তার ৬৫ বলের ইনিংসে ১৪টি চার ও ৫টি ছক্কা ছিল। সিমন্সের সেঞ্চুরিতেই ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৫ রান পায় সিলেট। মোসাদ্দেক অপরাজিত ছিলেন ১৩ রানে।
১৭৬ রানের জবাবে প্রথম ওভারেই উইকেট হারাতে বসেছিল ঢাকা। তাসকিন আহমেদের করা প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান তামিম ইকবাল। জীবন পেয়ে সিলেটের বোলারদের উপর চড়াও হন তামিম। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে পাওয়ার প্লেতেই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ২৭ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৪৩তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম।
হাফ-সেঞ্চুরির পরও নিজের মারমুখী মেজাজ ধরে রেখেছিলেন তামিম। এতে নবম ওভারেই সেঞ্চুরিতে পৌঁছায় ঢাকার ইনিংস। আর দশম ওভারে ব্যক্তিগত ৭৫ রানে দু’বার জীবন পান তামিম। তামিমের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের সামনে ঢাকা পড়েছিলেন আরেক ওপেনার আহমেদ শাহজাদ। যখনই স্ট্রাইকে গেছেন রানের গতি ধরে রেখে খেলেন তিনি। ১৫তম ওভারে হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান শাহজাদ। ৩৪তম বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ-সেঞ্চুরি পান শাহজাদ।
১৬ ওভার শেষে ঢাকার জিততে দরকার ছিল ১৬ রান। তখন সেঞ্চুরি থেকে ৪ রান দূরে ছিলেন তামিম। আলাউদ্দিন বাবুর করা ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে লং-অফ দিয়ে চার মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তামিম। ৬১ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ও বিপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন তামিম।
২০১৯ সালে মিরপুরে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে সেঞ্চুরি করে ১৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন তামিম। তামিমের সেঞ্চুরির পর ওই ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন শাহজাদ। ৩৯ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৩ রান করেন শাহজাদ। আর ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি দিয়ে ঢাকাকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে তামিম। ৬৪ বলে ১৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১১১ রানে অপরাজিত থেকে যান তামিম।
শাহজাদের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ১৭৩ রান করেন তামিম ইকবাল। বিপিএলের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ ও উদ্বোধনী জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। ব্যাট হাতে মিনিস্টার ঢাকাকে ৯ উইকেটে জয় উপহার দেওয়ার ম্যাচে ম্যাচ সেরা হয়েছেন সেঞ্চুরি হাঁকানো তামিম ইকবাল।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস
[আমরা এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ইনস্টল করুন আমাদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস ]